কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নূর আশেকিন মোহাম্মদ তাইব বলেছেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি লাভ করছে তা বিশ্বের কাছে বিস্ময়। যেখানে মালয়োশিয়ার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৫ রাশিয়ার ৫ দশমিক ৪ সেখানে বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ : আউট কাম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএমসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সামিট অর্গানাইজ কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সংগঠনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো. আলমগীর জলিল ও সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন ও জেনারেল সেক্রেটারি সাব্বির আহমেদ খান। বিএমসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট স্থপতি আলমগীর জলিল বলেন, আমাদের এ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশকে চেনানো। আমার মনে হয় সে কাজটা আমরা করতে পেরেছি। ওরা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে চায়।
বিএমসিসিআই সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই সামিটের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে পরিচিত করে দেয়া। আমরা আশা করছি এখন বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ বাড়বে। বর্তমানে বাংলাদেশের পরিচয় যে ‘নতুন বাংলাদেশ’ সে বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরতে হবে।
সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের ‘ব্রান্ডিং’ কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে। আগে বিদেশিদের ধারণা ছিল- এ দেশ দারিদ্র্য, দুর্বল অর্থনৈতিক কাঠামো এবং প্রাকৃতিক বির্পযয়ের একটি দেশ। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশের যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তাতে বিদেশিরাও হতভম্ব। তারা এ দেশের অগ্রগতির কারণ জানতে চায়।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছে। তার মধ্যে পদ্মা সেতু, ঢাকা চিটাগাং এক্সপ্রেস ওয়ের মতো প্রকল্প হয়েছে। এই দেশ আর ঠেকাবে কে? এসব দেখে বিদেশিরা এখন আমাদের দেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বর্তমাান সরকার ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এ সরকার সারা দেশে ১০০টি ইপিজেড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একবার ভাবুন, এই ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে যদি ১০০টি করে কারখানা করা হয় তবে দেখবেন দশ হাজার কারখানার প্রয়োজন। এখন এ কারখানাগুলো চালু রাখতে তো বিনিয়োগের প্রয়োজন। আর যখন বিদেশিরা বুঝবে যে, এ দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ভালো
তখন তারা এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। আমাদের এসব বিষয়ে পজেটিভ হতে হবে। মনে রাখতে হবে, সব সময় ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করতে হবে, তবেই দেশ এগিয়ে যাবে।
মালয়েশিয়ায় এবারের মেলাতে প্রায় ২৫০ জন বিনিয়োগকারী এসেছিল বলেও জানান মোয়াজ্জেম হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৫ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে ওই সামিট অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সামিটের উদ্বোধন করেন। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্প উপমন্ত্রী ওয়াই বি দাতুক চুয়া তি উং। বাংলাদেশের হাইকমিশনার শাহিদুল ইসলাম এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
সামিটে ২০টি মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিদ্যুৎ, আইটি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশি পণ্য ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আমদানি বাড়াবে মালয়েশিয়ার সরকার।